আমি গর্বিত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসেবে।
আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান,আমি মুক্তিযুদ্ধ করিনি বা মুক্তিযুদ্ধ দেখিওনি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যখন পড়ি, শুনি বা মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যখন সঙ্গ দেই, তখন আবেগে চোখে পানি এসে যায়।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বুলেটের আঘাতে মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও দেশ স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধে নেমেছিলেন, এমনটা ভাবতে নিজেকে খুব গর্ব মনে হয়। এমন একটি দেশে জন্ম হয়েছে, এমন একটি দেশে বাস করছি। আবার যখন সেই মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করতে দেখা যায়, তখন বড় কষ্ট লাগে, তা বড় বেদনার।আর যখন স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে সেই মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের নামে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যায় অমুক্তিযোদ্ধা আর অমুক্তিযোদ্ধা হয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধা; তাও দেখতে হয়। আসলে মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বিতর্ক কখনোই কাম্য ছিল না আমাদের।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্নভাবে অসম্মানও করা হচ্ছে। বাংলাদেশের আজকের অবস্থানের পেছনে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর যোদ্ধাদের অবদান অনন্য এবং অতুলনীয়।
বাংলাদেশে আজ অসংখ্য অট্টালিকা গড়ে উঠেছে, গড়ে উঠেছে বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সেতু, রাস্তাঘাট, সুসজ্জিত দোকান বিপণি, চোখ ধাঁধানো নানা মার্কেট, হাসপাতাল, রেলপথ নির্মিত হচ্ছে, পদ্মা সেতু সমাপ্তি প্রায় এবং আরও কত কিছু। অর্জন অনেক কিন্তু যথেষ্ট নয়। হাঁটতে হবে আরও অনেক পথ।
কিন্তু এই যত কিছু অর্জন তা সম্ভব হয়েছিল ৫০ বছর আগের সেই মহান মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা অর্জন ও বিজয় ছিনিয়ে আনার সাফল্যের কারণে। আর সেই সাফল্যের পেছনে রয়েছে অগণিত মুক্তিযোদ্ধার অতুলনীয় অবদান।
তাই মুক্তিযোদ্ধারাই যে স্রষ্টা বাংলাদেশের, সে কথা মনে প্রাণে, অন্তরের সব শ্রদ্ধাবোধ থেকে মানতে হবে।
সর্বাধিক সম্মানে সব ক্ষেত্রে সম্মানিত করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধারা কিছু পাওয়ার ব্যক্তিস্বার্থে কিছু অর্জনের জন্য লড়াই করেননি। কোনো মোহ ছিল না তাঁদের।মুক্তিযোদ্ধারা যেমন বঙ্গবন্ধুর ডাকে ও সর্বোচ্চ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির জন্য স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ ত্যাগ করতে কার্পণ্য করেননি।
স্পষ্ট ভাষায় বলি, সেই মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সব ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। কোনো দয়া বা কৃপা নয়।
পরিশেষে,শোকাবহ আগষ্ট মাসে বঙ্গবন্ধু সহ পরিবারের সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
যেসকল জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা দুনিয়া থেকে চলে গেছেন তাঁদের সকলের আত্মার শান্তি ও জান্নাত কামনা করছি।
এবং যারা জীবিত তাঁদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
সাইফুর রহমান
মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান।
২৫/০৮/২০২১