মুহাদ্দিস ছাহেব হুজুরের চলে যাওয়া ও কিছু কথা
—ছাদিকুর রহমান সিরাজী
বৃহত্তর সিলেট তথা বাংলাদেশের অবিসংবাদিত হাদীস বিশারদ আল্লামা ছালিক আহমদ ছাহেব চলে গেলেন মাওলায়ে হাকিকীর দরবারে। আল্লাহ তার মায়ার বান্দাকে রহমতের চাদরে মোড়ানো জান্নাতের মেহমান করুন।
তিনি ছিলেন একজন সত্যবাদী আলেম, ইলমে হাদীসের নিরলস খাদিম, একজন প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ। সৎপুর দারুল হাদীস টাইটেল মাদরাসার প্রধান মুহাদ্দিস ও ভাইস প্রিন্সিপাল ছিলেন। লতিফিয়া কারী সোসাইটির সভাপতি ছিলেন। দারুল কিরাতের প্রধান কেন্দ্রের পরীক্ষক ছিলেন। একজন সম্মানিত মোবাল্লিগ ছিলেন। ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহির খলিফা ছিলেন। এরকম হাজারটি গুণ ও মর্যাদার অধিকারী ছিলেন তিনি। আল্লাহ তার মর্যাদাকে আরো বুলন্দ করুন।
এক সপ্তাহ হয়নি হুজুরের সাথে খতমে বুখারীর একটি দুআ মাহফিলে ছিলাম। কদমবুসি করলাম। আমার দিকে তাকিয়ে একটি জান্নাতি মুচকি হাসি দিলেন। এখন বুঝলাম সেই হাসিই ছিলো আমার সাথে তার বিদায়ী হাসি। বিভিন্ন মাহফিলে আমি হুজুরের মুখে আসহাবে বদরীনের হাদীস পাঠ শোনেছি। সেদিনের পাঠ ছিলো অত্যন্ত বিনয়াবনত, নরম সুরে, মায়াময় কন্ঠে। মীলাদ ও দুআ ছিলো মনোমুগ্ধকর। আমরা তো আরো কিছুদিন আছি। হুজুর চলে গেলেন। খতমে বুখারীর মজলিসগুলোতে হুজুরের জবান আর শোনা হবে না। রহমান ও রহীম তার উপর মেহেরবানী করুন!
হুজুর একজন সফল মানুষ। যে মাদরাসার ছাত্র, সেই মাদরাসার মুহাদ্দিস ছিলেন। উসতাযগণ কতো বড়ো বিশ্বাস রেখেছেন তার উপর। এটাই জীবনের সবচেয়ে বড়ো চাওয়া–পাওয়া। হুজুরের বাড়ী বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের ভুরকি গ্রামে। এই এলাকার মানুষ এমনিতেই ইসলাম ও আলেমপ্রিয়। ভুরকি থেকে হাজার হাজার হুফফাজ বের হয়েছেন। অনেক আলেমের জন্ম হয়েছে এই মাটিতে। হুজুর ছিলেন এই এলাকার পূর্নিমা চাঁদের মতো আলো ছড়ানো এক নক্ষত্র। আজ ২৪শে জুন বৃহস্পতিবার সেই নক্ষত্রের আলো থেকে বঞ্চিত হলো সিলেটের মুসলিম জনতা। এই ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়, পূরণ হবে না!
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার দরবারে সৎপুরী বৃক্ষের প্রতিটি ফুল, ফল ও শাখা–প্রশাখার মকবুলিয়ত কামনা করি। আল্লাহ সবাইকে কবুল করুন! আ-মীন ইয়া রাব্বাল আলামীন।
Tags
সিলেট